করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে গত ২৬ মার্চ থেকে ধাপে ধাপে ছুটি বাড়াচ্ছে সরকার। সব প্রজ্ঞাপনেই এই জাতীয় দূর্যোগে সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু অনেকেই সেটা না মেনে কর্মস্থল ছেড়ে বাড়ি চলে গেছেন। ফলে বিঘ্ন ঘটছে সরকারের নানা নির্দেশনা বাস্তবায়নে। তাই কর্মস্থলে অনুপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়ে জেলা প্রশাসক, সেখান থেকে বিভাগীয় কমিশনার হয়ে সেই তালিকা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হবে। পরে এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।তাই কর্মস্থলে অনুপস্থিত কর্তারা বিপদেই পড়তে যাচ্ছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার মাদারীপুরের শিবচরে অনুপস্থিত বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার ১১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সে তালিকা পাঠানো হয়েছে। নিজ নিজ মন্ত্রণালয় এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বলে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন শনিবার বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আসছে, কোথাও কোথাও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা অনুপস্থিত রয়েছেন। আমরা তাদের তালিকা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পাঠানোর জন্য বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের বলেছি।’
তিনি বলেন, ‘কোথাও কোনো অফিসারকে ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ট্যাগ অফিসার করা হলো, কিন্তু তিনি অনুপস্থিত। তিনি হয়তো বাড়ি চলে গেছেন। তার সার্ভিসটা আমরা পাচ্ছি না। সেজন্য কোনো কোনো স্থানে মেম্বাররা দুর্নীতি করছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্মকর্তারাও দুর্নীতি করছে।’
সচিব বলেন, ‘অনুপস্থিতি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা পেলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো। তবে এই তালিকা পাঠানোর জন্য কোনো সময় বেঁধে দেয়া হয়নি।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথমে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পরে তিন দফায় ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এদিকে অনেক কর্মকর্তার অনুপস্থিতির কারণে দেখা গেছে, ত্রাণ বিতরণ ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ডদের। এছাড়া সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা দিনরাত কাজ করছেন।
অন্যদিকে বারবার নোটিশের পরও অনেক কর্তকর্তা কর্মস্থলে উপস্থিত হননি। যে কারণে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানা গেছে। তবে যারা ছুটি পেয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেছেন, তারাও এখন সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন না।